হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা!

Nerve 08 Mar 2025
হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা!

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম (Hemifacial Spasm) হল একধরনের স্নায়বিক রোগ, যেখানে মুখের একপাশ অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপতে বা সংকুচিত হতে থাকে। এটি সাধারণত ফেসিয়াল নার্ভ (cranial nerve VII)-এর অসংলগ্ন সংকেতের কারণে ঘটে। এই অবস্থা ধীরে ধীরে শুরু হয়ে সময়ের সাথে সাথে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে।

ভূমিকা

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম (Hemifacial Spasm) হল একধরনের স্নায়বিক রোগ, যেখানে মুখের একপাশ অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপতে বা সংকুচিত হতে থাকে। এটি সাধারণত ফেসিয়াল নার্ভ (cranial nerve VII)-এর অসংলগ্ন সংকেতের কারণে ঘটে। এই অবস্থা ধীরে ধীরে শুরু হয়ে সময়ের সাথে সাথে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে।

কারণ

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজমের প্রধান কারণ হলো ফেসিয়াল নার্ভের ওপর রক্তনালির চাপ। অন্যান্য সম্ভাব্য কারণসমূহ:

নার্ভ কম্প্রেশন: মস্তিষ্কের মধ্যে ফেসিয়াল নার্ভের ওপর একটি ক্ষুদ্র রক্তনালি (আর্খেরি) চাপ দিলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ব্রেইন স্ট্রোক: স্ট্রোকজনিত নার্ভ ড্যামেজের ফলে মুখের পেশিগুলোর অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন হতে পারে।

টিউমার: ব্রেইনস্টেম বা ফেসিয়াল নার্ভের কাছে টিউমার থাকলে এটি ফেসিয়াল স্পাজম সৃষ্টি করতে পারে।

ডিমাইলিনেটিং ডিজিজ: যেমন মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (MS), যেখানে নার্ভের মাইলিন শিথ নষ্ট হয়।

লক্ষণ

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং সময়ের সাথে খারাপ হতে পারে। লক্ষণগুলো হলো:

চোখের পাতা বারবার ঝাঁপানো (Blepharospasm)

মুখের একপাশ অনিয়ন্ত্রিতভাবে সংকুচিত হওয়া

কথা বলা বা খাওয়ার সময় সমস্যার অনুভূতি

কিছু ক্ষেত্রে কানে অস্বাভাবিক শব্দ (Tinnitus)

দীর্ঘদিনের স্পাজমের ফলে মুখের স্থায়ী টান (contracture) তৈরি হতে পারে

ডায়াগনোসিস

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম নির্ণয়ের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পরীক্ষা করা হয়:

ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা: রোগীর মুখের পেশির অস্বাভাবিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।

MRI স্ক্যান: নার্ভ কম্প্রেশনের কারণ (যেমন টিউমার বা ভাস্কুলার কম্প্রেশন) চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।

ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি (EMG): পেশির সংকোচন পরিমাপ করে সমস্যা নির্ণয় করা হয়।

চিকিৎসা

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজমের চিকিৎসার প্রধান পদ্ধতিগুলো হলো:

1. মেডিকেশন:

এন্টি-কনভালসেন্ট: যেমন Carbamazepine, Gabapentin ইত্যাদি।

Muscle Relaxant: কিছু ক্ষেত্রে Baclofen ব্যবহৃত হয়।

2. বটুলিনাম টক্সিন (Botox) ইনজেকশন:

এটি ফেসিয়াল পেশির অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন কমাতে খুব কার্যকর।

এর প্রভাব ৩-৬ মাস স্থায়ী হয় এবং পুনরায় ইনজেকশন দিতে হয়।

3. সার্জারি:

মাইক্রোভাসকুলার ডিকম্প্রেশন (MVD): যদি ফেসিয়াল নার্ভের ওপর একটি রক্তনালি চাপ সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে সার্জারির মাধ্যমে এই চাপ সরানো হয়। এটি স্থায়ী সমাধান দিতে পারে।

উপসংহার

হেমি-ফেসিয়াল স্পাজম একটি বিরক্তিকর এবং সামাজিকভাবে অস্বস্তিকর রোগ, তবে এটি নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আধুনিক চিকিৎসা, বিশেষ করে Botox ইনজেকশন ও মাইক্রোভাসকুলার ডিকম্প্রেশন (MVD), বেশ কার্যকর পদ্ধতি। দ্রুত চিকিৎসা নিলে রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।